১/২৫০ ডাহা সত্যি
তেলচিটে একটা
গুমটি দোকান। মূলত চায়ের। সঙ্গে সাবান। সঙ্গে চার ধরনের বিড়ি, এক ধরনের সিগারেট, চপ
ঘুগনি মুড়ি। মুড়ি ঘুগনি খাচ্ছিলাম। এককড়াই চপ ফুটন্ত তেলে ছপর ছপর করছে। সাত সকালে চপ খাওয়া তেমন খারাপ কিছু তো নয়! মনকে
বোঝাচ্ছিলাম। মন বুঝছিল না। যেমন বুঝতে চাইছিল না, মেয়ে কুকুরটা। চলেই যাচ্ছে। সাদা
রঙের ছেলে কুকুরটা স্বভাবে মাত্র টেন পারসেন্ট লম্পট। সে সাম্মি কাপুরের মত ঘাড় কাত
করে রাস্তা আটকে দাঁড়াচ্ছে, নাক দিয়ে ঠেলছে। খেলবে বলে ডাকছে। মেয়েটা শুনছে না। লাবপুর—বোলপুর
খ্যাপা ষাঁড়ের মতো ছুটে গেল। হালকা ছোঁয়া পাওয়া আর না পাওয়ার তফাত সামান্য নয়। বেঁচে
আছে সাদা কুকুর। ঘাড় ঘুরিয়ে একবার ছুটন্ত বাসের দিকে দেখল। কই ভয় পেল না তো! আবার ছুটল।
আগে মেয়ে কুকুরটা। পিছনে সে। এই ভাদ্রে মৃত্যু কানে কানে বাতাস ফুঁকে চলে গিয়েছে। পরের
ভাদ্রে হিটগ্রস্ত কুকুরটির মনে থাকবে সেকথা? কিছু পড়ে যাওয়া ঠিক মনে থাকে। স্লো মোশনে
পড়ে যাচ্ছি। যাচ্ছি—যাচ্ছি—যাচ্ছি—এই পড়লাম। আগে মাথা না বডি—ঠিক কত ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে—বাঁদিকে ডানদিকে নাকি হুমড়ি খেয়ে—মাটি
টাচ করল—সেই পর্যন্ত। কাঁচা হাতে কায়দা মারতে মারতে সাইকেল নিয়ে সোজা দশ চাকার ট্রাকের
মুখোমুখি চলে গেলে, মরে যাওয়ার কথা। আমি শুধু পড়ে গিয়েছিমাল। সেই রুদ্ধশ্বাস এক সেকেন্ডের
আড়াইশো ভাগের এক ভাগ, ডাহা সত্যি। মাঠ থেকে হটাৎ টার্ন করে বড় রাস্তা নিলাম। কেন নিয়েছিলাম
মনে নেই। শুধু মনে আছে, লরিটা আসছে। চাইছি রাস্তার বাঁদিক চেপে চলতে, কিন্তু চলে যাচ্ছি
ডানদিকে, রাস্তার মাঝখানে। লরির চাকা টিপ করে এগিয়ে যাচ্ছি। লরি ব্রেক কষেছে। ক্যাঁচক্যাঁচ
ক্যাঁচক্যাঁচ। আমার হাতেও ব্রেক ছিল। সময়ে সে কথা মনেই পড়ল না। মারলাম। পড়লাম ছিটকে।
লো অ্যাঙ্গেলে লড়ির চাকা। ব্যাস এরপর যা বলব, সব জল মিশিয়ে। যা ভাবব সব কষ্ট করে। কিন্তু
এত কিছু খামোখা ভবছি কেন?
হিটগ্রস্ত কুকুরটা ভাবল।
Comments
Post a Comment